৭ জুন ২০২৪, বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ দিন। সকালে, সারা দেশে ছাত্রদের মধ্যে বিক্ষোভের ঢেউ ছিল। ছাত্ররা রাস্তায় নেমে এসে দাবি জানাচ্ছিলেন, "আমরা আমাদের মেধা অনুযায়ী কাজ চাই!" রাজধানী ঢাকার শাহবাগ, রাজপথ, এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলো থেকে শুরু করে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে একযোগে সমাবেশ হচ্ছিল।
উত্তেজনার মুহূর্ত
বিকেলের দিকে, শাহবাগ মোড়ে জমায়েত হওয়া ছাত্রদের মাঝে উত্তেজনা বাড়তে থাকে। সেই মুহূর্তে, প্রিয়জনদের ছবি হাতে নিয়ে কিছু ছাত্ররা সরকারী কর্মচারীদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করতে থাকেন। তারা চিৎকার করতে থাকেন, “কোটা ব্যবস্থা বাতিল করতে হবে!” স্থানীয় নেতা ও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বরা এই বিক্ষোভে যোগ দিয়ে তাদের সমর্থন জানান।
সংঘর্ষের শুরু
তবে, শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ কিছুক্ষণ পর সহিংসতায় রূপ নেয়। পুলিশ ছাত্রদের ওপর লাঠি চালাতে শুরু করে, যা পরিস্থিতিকে আরো উত্তপ্ত করে তোলে। ছাত্ররা নিজেরা প্রতিরোধ করতে গেলে সংঘর্ষ শুরু হয়। এসময় নিরাপত্তা বাহিনী কাঁদানে গ্যাস ব্যবহার করে, যা জনতার মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করে। ফলে, সেখান থেকে পালিয়ে যাওয়া ছাত্ররা আতঙ্কিত হয়ে দিগ্বিদিক ছুটতে থাকে।
জনতার প্রতিবাদ
এরপর একদল ছাত্র সাহস করে পুলিশের দিকে এগিয়ে যায়। তারা নিজেদের হাতে স্লোগান লেখা প্ল্যাকার্ড তুলে ধরে সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ জানায়। "আমরা আমাদের অধিকার চাই" এবং "প্রতিনিধিত্বের জন্য লড়াই" এরকম স্লোগান পুরো এলাকায় গড়িয়ে পড়ে।
একটি ঐতিহাসিক পরিবর্তন
৭ জুনের এই ঘটনার প্রভাব দেশের রাজনীতিতে গভীর ছাপ ফেলতে শুরু করে। ছাত্রদের এই জাগরণ শুধু কোটা সংস্কারের দাবি নিয়ে নয়, বরং একটি বৃহত্তর সামাজিক আন্দোলনের সূচনা করছে। দেশের জনগণ, বিশেষত তরুণ প্রজন্ম, এবার নিজেদের দাবি আদায়ে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।
সেদিনের ঘটনা শুধু কোটা সংস্কার আন্দোলনের একটি অধ্যায় নয়, বরং এটি একটি নতুন আশা ও শক্তির প্রতীক হিসেবে পরিচিতি পায়। ছাত্ররা বুঝতে পারে, একসঙ্গে লড়াই করে তারা নিজেদের কণ্ঠস্বর প্রতিষ্ঠা করতে পারে।
উপসংহার
৭ জুন ২০২৪, বাংলাদেশের রাজনৈতিক দৃশ্যে একটি মাইলফলক হয়ে দাঁড়ায়। ছাত্রদের এই ঐক্য ও সাহসিকতা ভবিষ্যতে তাদের অধিকারের জন্য লড়াই করার প্রেরণা যুগিয়ে যায়। তাদের অবিরাম সংগ্রামটি প্রমাণ করে যে, যখন তরুণ প্রজন্ম নিজেদের অধিকার নিয়ে সোচ্চার হয়, তখন ইতিহাস তাদের সঙ্গেই থাকে।
এটি একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা—যেখানে সাধারণ ছাত্রদের জাগরণ দেশের ভবিষ্যত নির্মাণে কার্যকর ভূমিকা পালন করবে।
Comments (0)